জীবন পথের বাঁকে বাঁকে

ছোট বেলায় মা বাবার চাকুরীর সুবাদে আমরা সিলেটে থাকতাম, সেই ১৯৬৯ সালের কথা। মনে পড়ে সুপারি গাছের নৌকার মত অংশটা যখন শুকিয়ে মাটিতে পড়ত, ওগুলোতে চেপে আমরা পাড়ার ছেলে মেয়েরা টিলার ঢাল বেয়ে উপর থেকে নীচে নেমে আসতাম, কি যে মজা লাগত, তা হয়ত ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। সে এক অন্যরকম ভাল লাগা! আবার ওগুলো টেনে হিঁচড়ে উপরে নিয়ে যেতে বেশ কষ্ট হত, কিন্তু সেই কষ্টের কথা মনে নেই, কারণ সেই আনন্দের মাঝে কষ্ট বিলিন হয়ে যেত।। মাঝে মাঝে যে দূর্ঘটনা ঘটত না, তা না! বাবা মার বকুনি খেলেও, সেই মজা আমাদের সারা শরীর জড়িয়ে থাকত। কোন একদিন ঢাল বেয়ে নামতে গিয়ে পাথরের সাথে ভীষণ ধাক্কা খাই, এতে মারাত্মকভাবে মাথায় চোট লাগে, আর এভাবেই কোন এক সময় সেই খেলার মাঝে আতঙ্ক বা ভয় সংগোপনে ঢুকে পড়ে, ধীরে ধীরে মজা ভয়ে রূপান্তরিত হয়। যেখানেই এগিয়ে গেছি, যেখানেই থেমেছি, আতঙ্ক ছায়ার মত পিছু নিয়েছে। এরই মাঝে বুঝতে শিখেছি,

আমাদের জীবনটা আসলে রোলার কোষ্টারের মত, এই হাসি, এই আতঙ্ক, মৃত্যু ভয়, ঝুঁকি ইত্যাদির এক চলমান উঠা-নামা। জিলাপীর প্যাঁচের মত- বাঁক ঘুরে ঘুরে আমাদের জীবনের পথ চলা। এরই মাঝে জীবনের অনেকগুলো বছর পিছনে ফেলে এসে অবশেষে এক সার্বজনিন বাস্তবতার অপ্রত্যাশিত ঘটনার সাক্ষী হলাম। আতঙ্কের টর্নেডো একই সঙ্গে গোটা বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছিল, যা কিনা মানব ইতিহাসের এক নতুন অভিজ্ঞতা।

কোভিড-১৯ আমার জীবনে হিমছড়ির পাহাড় বেয়ে উপরে ওঠার মত ছিল, একদিকে যেমন পঞ্চাশোর্ধ বয়স(কোরোনার সবচেয়ে নিশ্চিন্ত চারণভূমি), অন্যদিকে দূর্বল দৈহিক কাঠামো, অর্থনৈতিক অনিশ্চিয়তা, আমার স্ত্রী ও মেয়েদের সুস্থতার নিরাপত্তা, অফিসে কম বয়সীদের কাছ থেকে সংক্রমিত হবার ভয়, আমার পরিবারের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ শঙ্কা ইত্যাদির এক ভয়ালো দানব মনের মধ্যে চেপে বসে। পার্থিব বিচার বুদ্ধি লোপ পায়, কেননা তখনও প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি, আদৌ হবে কিনা তা নিয়ে বিজ্ঞানের লড়াই চলছিল। মনুষ্য চক্ষুর অন্তরালে, আমার অগোচরে গভীর ক্ষত তৈরী হচ্ছিল। এই ক্ষুদ্রতম অনুজীবকে ঠেকাতে সবাই নিজ নিজ সামর্থ অনুসারে নিজেকে আড়াল করে রাখছে। আমিও নিজেকে সুরক্ষিত রাখবার আপ্রান চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলাম। ঘন কুয়াশা যেমন প্রকৃতির সৌন্দর্যকে ঢেকে দেয়, তেমনি আমার স্বপ্নও যেন দিন দিন অনিশ্চিয়তার আতঙ্কে ঢেকে যাচ্ছিল। আর সেই ভয়, সেই আতঙ্ক, সেই শঙ্কার সীমা অতিক্রম করবার আগেই ধীরে ধীরে আমার অন্তর-দৃষ্টিতে উপলব্ধি করলাম যে, সৃষ্টিকর্তার মহা অনুগ্রহের জানালা খুলে যাচ্ছে!!

সেই পরম স্নীগ্ধতার পরশ আমার বাসনা, আমার কামনা, আমার অভিলাষ, আমার অভিপ্রায়, আমার অভীষ্ট লক্ষ্য, আমার পরিকল্পনা, আমার আধ্যাত্বিকতার বেড়াজালকে ডিঙ্গিয়ে সৃষ্টিকর্তার প্রতি বিশ্বাসের ভিত্তি মজবুত ও সুদৃঢ় হতে থাকে। তাঁর শাস্ত্রীয় বা কিতাব থেকে প্রাপ্ত বাণী আমার অন্তকরণের অস্থীরতাকে শান্ত করে দেয়:

“আকাশের পক্ষীদের প্রতি দৃষ্টিপাত কর; তাহারা বুনেও না, কাটেও না, গোলাঘরে সঞ্চয়ও করে না, তথাপি তোমাদের সৃষ্টিকর্তা তাহাদিগকে আহার দিয়া থাকেন; তোমরা কি তাহাদের হইতে অধিক শ্রেষ্ঠ নও?”


“তুমি সমস্ত চিত্তে সৃষ্টিকর্তার উপর বিশ্বাস কর; তোমার নিজ বিবেচনায় নির্ভর করিও না; তোমার সমস্ত পথে তাঁহাকে স্বীকার কর; তাহাতে তিনি তোমার পথ সকল সরল করিবেন।”

আমার জীবনের বাঁকে বাঁকে উদয় হলো নতুন সূর্য, নতুন রংধনু। জীবন ভরে গেল নিস্তব্ধ, নিরব প্রশান্তির নিশ্চয়তায়। রবীন্দ্রনাথের একটি কবিতার লাইন মনে পড়ে গেল:

স্তব্ধতা উচ্ছ্বসি উঠে গিরিশৃঙ্গরূপে,
উর্ধ্বে খোঁজে আপন মহিমা।
গতিবেগ সরোবরে (হ্রদে) থেমে চায় চুপে
গভীরে খুঁজিতে নিজ সীমা।

আমার বিশ্বাস আপনার জীবনের বাঁকও ভরে উঠবে দীগন্ত ভরা প্রত্যাশায় যদি নিজেকে উজার করে সৃষ্টিকর্তার কাছে নত হয়ে প্রণিপাত করেন। আমরা আপনার পাশে আছি, পাশে থাকব প্রতিশ্রুতি দিলাম। আপনার সমস্ত তথ্য আমরা গোপন রাখব।


আপনার একা লড়াই করার প্রয়োজন নেই। একজন নির্দেশকের সাথে কথা বলুন, এটি গোপন থাকবে।

এই সংগ্রামের সাথে লড়াই করা কঠিন। আপনি যদি নিজের বা অন্যকে ক্ষতি করার কথা ভেবে থাকেন তাহলে, এটি পড়ুন!

দয়া করে নীচের ফর্মটি পূরণ করুন যাতে আমরা আপনার সাথে যোগাযোগ করতে পারি। উল্লেখিত ফিল্ট ছাড়া বাকি সব ফিল্ডগুলি আবশ্যক।

আপনার লিঙ্গ:
বয়স সীমা:

আপনার জন্য সঠিক মেন্টর নিযুক্ত করার জন্য আপনার লিঙ্গ ও বয়স জানতে চাই। ব্যবহারের শর্তাবলী & গোপনীয়তা নীতি.