পকেটে টান

আমি পৃথিবীর সবচেয়ে গরিব মানুষ নই, একদমই না — কখনোই ছিলাম না এবং আশা করি, কখনো হবোও না। আমার পরিবারে খাবারের কোনো অভাব নেই, আমাদের দুইটি গাড়ি আছে, আমরা একটি সুন্দর বাড়িতে থাকি এবং মাঝে মাঝে আনন্দঘন অভিজ্ঞতাগুলো উপভোগ করতে পারি। আমেরিকার মান অনুযায়ী, আমরা একটি সুস্থ মধ্যবিত্ত জীবনযাপন করছি।

কিন্তু অনেক রাত আমি নির্ঘুম কাটিয়েছি কারণ, আমাদের আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে দুশ্চিন্তা আমাকে আচ্ছন্ন করে রাখত।

আমার স্ট্রেসের একটি বড় কারণ ছিল। আমি তখন একটি অলাভজনক স্টার্ট-আপে কাজ শুরু করেছিলাম। আমার মাসিক বেতন নির্ভর করত তহবিল সংগ্রহের ওপর। আমরা তখন নতুন ধরণের একটি উদ‍্যোগের জন‍্য অর্থ সংগ্রহ করেছিলাম। কিন্তু উদ‍্যোগটা ভালো হলেও সেটার সাফল‍্য পরীক্ষিত ও প্রমাণিত নয়।এছাড়াও, আমার বেতন খুব বেশি নিয়মিত বা পর্যাপ্ত ছিল না। তার উপর, আমার স্ত্রী নিছকই গৃহিণী, তিনি আমাদের চার সন্তান নিয়ে বাড়িতে থাকতেন। সুতরাং, নিঃসন্দেহে, আমাদের এই পরিস্থিতি আমাদের নিজের সিদ্ধান্তের ফল।
তবুও আমরা দুজনেই তখন এবং এখনও মনে করি যে আমরা সঠিক কাজটি করছিলাম।
কিন্তু এতে করে দুশ্চিন্তা কমে যায়নি।

কয়েক মাসের মধ্যে আমাদের সঞ্চয় শেষ হয়ে যায়, এবং আমরা ধারের ওপর নির্ভর করতে শুরু করি। সেইদিনটা আমার স্পষ্টভাবে মনে পড়ে, যেদিন আমি পরিস্থিতির ভয়াবহতা বুঝতে পারি। আমি আমাদের সমস্ত ঋণ (বাড়ির বন্ধক ছাড়া) যোগ করি এবং দেখি আমাদের ঋণের পরিমাণ ৭০,০০০-ডলারেরও বেশি! মনে হলো যেন এক অথৈ সাগরের মধ‍্যে পড়লাম আমরা।

আমরা এমন একটি সীমা অতিক্রম করেছিলাম, যা মোটেও গ্রহণযোগ্য ছিল না।

আমি সংখ্যাগুলো নিয়ে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমি আমাদের সমস্ত আয় ও ব্যয়ের একটি ব্যালান্স শিট তৈরি করলাম এবং তা ক্রমাগত বিশ্লেষণ করতাম। আমি সবকিছু হিসাব করে দেখতাম — এই মাসে কি খরচ কমবে? যদি কোনোভাবে অতিরিক্ত অর্থ আসে, তাহলে কোন ক্রেডিট কার্ডের বিল বা কোন ঋণটা আগে শোধ করব?

অর্থের জন্য অন্যের ওপর নির্ভর করা আমি ঘৃণা করি। আমি স্বাধীন, আমি আমেরিকান, এবং আমি আমার পরিবারের দেখাশোনা করব এবং তাই নিয়ে গর্বিত হব। কিন্তু সেই বছর, আমি আমার ইচ্ছামতো পরিবারের চাহিদা মেটাতে পারিনি এবং ক্রমাগত সেই চাপ অনুভব করেছি। ঐ কঠিন সময়ে আমি একদম মাটিতে মিশে গিয়েছিলাম ।

এই চাপ আমার আচরণেও প্রকাশ পেত। আমি সাধারণত অনেকটা সহজ-সরল, মজার, এবং সন্তানদের সাথে মজা করে সময় কাটাই। কিন্তু তখন সামান্য বিষয়েও আমি রেগে যেতাম। কথায় কথায় ধৈর্য হারিয়ে ফেলতাম। এমনকি তারা কোন দোষ না করলেও তাদের ওপর চিৎকার-চেঁচামেচি করতাম।

আমি মাঝে মাঝেই শুনতে পেতাম যে আমার স্ত্রী বাচ্চাদের বলছে যে, “বাবার কাছ থেকে আজ সাবধান থেকো। বাবার মুড কিন্তু একদম ভালো নেই।”

আর্থিক চাপ আমাকে এবং আমার পরিবারকে এভাবে প্রভাবিত করছিল- এ ব‍্যাপারটা একদমই ভালো হচ্ছিল না। আমি সবসময় মনে করতাম যে আমি এমন একজন মানুষ যাকে অর্থ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না; বরং আমিই অর্থকে নিয়ন্ত্রণ করব। আমার সন্তানদের কাছেও আমি এই বার্তাটি দিতে চাইতাম। কিন্তু আমি নিজেই তখন অর্থ দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছিলাম । অন্তত আমার চিন্তা, মনোভাব, এবং চাপের মাত্রা তো অর্থ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছিলই।আমার সন্তানদের জন‍্যে আমি মোটেও ভালো কোন দৃষ্টান্ত স্থাপন করছিলাম না।

আমি আমার স্ত্রীর কাছ থেকে আর্থিক দুরবস্থার প্রকৃত অবস্থা কিছুটা গোপন রেখেছিলাম, যাতে তাকেও আমার মতো বিপর্যস্ত না করে তুলি।

কিন্তু সে বুঝতে পারত, আমার খিটখিটে মেজাজের কারণ কী।

সে একসময় আমাকে জিজ্ঞেস করতে শুরু করল, আমার কি এই অলাভজনক চাকরিটি চালিয়ে যাওয়া উচিত? নিশ্চয়ই আমি অন্য কোনো চাকরি করে ভালো ও স্থায়ী আয়ের সুযোগ পেতে পারি। তবুও সে জানত, আর্থিক সমস্যাগুলো সত্ত্বেও আমি এই কাজটি চালিয়ে যাবই। তাই, আমার সমস‍্যাগুলো ওর কাছ থেকে গোপন করে চলতাম। নাহলে তো প্রমাণ হয়ে যাবে যে আমার স্ত্রীর কথাই ঠিক। কিন্তু সারাক্ষণ এইভাবে সত‍্যগুলো লুকিয়ে রাখতে গিয়ে আমার মানসিক চাপ আরো বেড়ে যেত।

আমি এমন ভাব করতাম যেন সব ঠিকই আছে। কিন্তু পরে ঠিকই বোঝা যেত যে কিছুই ঠিক নেই । শেষে বিরক্ত হয়ে ছেলে-মেয়ের উপর অকারণেই চিৎকার-চেঁচামেচি করতাম। নাহয় মেজাজ খিটখিটে হয়ে থাকত।

ধীরে ধীরে আমাদের পরিস্থিতি কিছুটা উন্নত হয়েছে। এখন স্টার্ট-আপটি বেশ ভালো চলছে এবং আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হয়ে উঠেছে। আমাদের জন্য সুড়ঙ্গের শেষে আলো দেখা যাচ্ছে, তবে আমরা এখনও পুরোপুরি নিরাপদ নই।

সেই বছর আমার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময়গুলোর একটি ছিল। কিন্তু এটি আমার চরিত্রকে গঠন করেছে। আমি আমার খরচের অভ্যাসের প্রতি আরও সচেতন এবং দায়িত্বশীল হয়েছি। আমি স্ট্রেস সামলানোর অনুপযুক্ত উপায়গুলো বুঝতে পেরেছি। এবং অন্যদের উদারতা কাছ থেকে দেখে, আমি নিজেও আগের চাইতে উদারচিত্ত মানুষ হয়ে উঠেছি।

এমন যদি হয় যে আপনি অর্থ নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন তাহলে, আমাদের সঙ্গে কথা বলুন। অর্থনৈতিক চাপ এমন একটি ছায়ার মতো, যা সবসময় আপনার পেছনে লেগে থাকে। কিন্তু আপনাকে একা এর মুখোমুখি হতে হবে না। নিচে আপনার তথ্য দিন এবং আমাদের দল থেকে কেউ আপনার সঙ্গে শীঘ্রই যোগাযোগ করবে।


আপনার একা লড়াই করার প্রয়োজন নেই। একজন নির্দেশকের সাথে কথা বলুন, এটি গোপন থাকবে।

এই সংগ্রামের সাথে লড়াই করা কঠিন। আপনি যদি নিজের বা অন্যকে ক্ষতি করার কথা ভেবে থাকেন তাহলে, এটি পড়ুন!

দয়া করে নীচের ফর্মটি পূরণ করুন যাতে আমরা আপনার সাথে যোগাযোগ করতে পারি। উল্লেখিত ফিল্ট ছাড়া বাকি সব ফিল্ডগুলি আবশ্যক।

আপনার লিঙ্গ:
বয়স সীমা:

আপনার জন্য সঠিক মেন্টর নিযুক্ত করার জন্য আপনার লিঙ্গ ও বয়স জানতে চাই। ব্যবহারের শর্তাবলী & গোপনীয়তা নীতি.