আমি চাকরি আর আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলি

আমি ২০ বছর যাবত একাধিক কোম্পানীতে চাকরি করেছি। সাত আটবার চাকরিস্থল পরিবর্তন করেছি। কোন কোন সময় চাকরি থেকে বরখাস্ত হয়েছি, আবার কোন কোন সময় নিজেই চাকরি ছেড়ে দিয়েছি। তাই আমার বয়স চল্লিশ বছর পেরিয়ে গেলে আমি স্থায়ী চাকরি খুঁজতে থাকি।

আগের একটি সংস্থা আমাকে আবার ডাকল, আমিও সুযোগটি লুফে নিলাম। নয় বছর আগে আমি ওখানে চাকরি করতাম। পরবর্তীতে আর্থিক অনুদান পেয়ে তারা স্থান পরিবর্তন করে। নতুন একটি বিল্ডিংয়ে অফিস শুরু করে। এই নতুন ভবনটি আগের ভবন থেকে আয়তনে অনেক বড়। সব কিছু ভালই চলছিল।

তাদের টাকা ছিল, তাদের দীর্ঘ মেয়াদী দর্শন ছিল এবং লক্ষ্য ছিল। আমার অনেক পুরোনো সহকর্মী ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে আবারও দেখা হয়েছিল। মনে হচ্ছিল যেন আমার স্বপ্ন সত্যি হয়েছে। যাদের সঙ্গে আমি আগে কাজ করেছি তাদের সঙ্গে পরিচিত পরিবেশে ফিরে আসতে পেরে আমি খুবই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছিলাম।

মনে হচ্ছিল যেন আমার ইচ্ছা সত্যি হয়েছে

কাজের শুরুতে আমাকে যে দলের দায়িত্ব দেয়া হয়, সেই দলের সঙ্গে পরিচিত হই। কয়েকজন ছাড়া দলের বেশিরভাগই ছিল নতুন। আর দলের পরিচিতরা আমার আগের দ্বায়িত্বের সময় অন্য দলের সঙ্গে ছিল। সব কিছু ভালই চলছিল। মনে হচ্ছিল যেন আমার ইচ্ছা সত্যি হয়েছে । আমি দ্রুতই সব কিছু রপ্ত করলাম আর প্রত্যাশার চাইতেও কম সময়ের মধ্যে শেখার জায়গাগুলো শিখে ফেললাম। এই প্রতিষ্ঠানটির মার্কেটিং খাতে প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ এবং বাহ্যিক সচ্ছলতা লক্ষ্য করে স্থায়ীভাবে এই প্রতিষ্ঠানে চাকরী করার ক্ষেত্রে আমার মধ্যে আস্থা তৈরী হয়।

এভাবে ৬ মাস পেরিয়ে গেলে পর জিলাপীর প্যাঁচ খুলতে শুরু করে। সংস্থার প্রধান তার নিজের ছেলেকে প্রধান ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসাবে নিয়োগ দেন। দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত সেই পদের জন্য যথাযথ অভিজ্ঞতা তার না থাকায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া ভেঙ্গে পড়তে শুরু করে। এতে সংস্থা অর্থনৈতিকভাবে দারুনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে। পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের বেতন পেতেও অনেক দেরি হতে থাকে।

চাকরির প্রায় এক বছরের মাথায়, টাউন হলের একটি সভায় কোম্পানীর সিইও আমাদের সকলকে একটি দু:সংবাদ দিলেন

চাকরির প্রায় এক বছরের মাথায়, সদস্যদের একটি সভায়, কোম্পানীর সিইও আমাদের সকলকে একটি দুসংবাদ জানালেন। বললেন, এই কোম্পানীকে সচল রাখতে হলে, কয়েকজন কর্মীকে ছাটাই করতে হবে। আমি নিজেকে ও আমার দলকে নিয়ে কিছুটা চিন্তিত ছিলাম বটে, তবে আমার মনে এই ভরসা ছিল যে, যেহেতু আমাকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে এবং আমার দলটিও খুব একটা বড় নয়, তাই হয়তো আমাদেরকে এই বিপদের সম্মুখিন হতে হবে না! অন্যদিকে, এই কর্মী ছাটাইয়ের ঘোষণার কিছু দিন আগেই, আমাদের সিইও তার অফিসে আমাকে ডেকে নিয়ে আমার বিভাগকে কী করে আরো শক্তিশালী করা যায় এবং দলকে কিভাবে আরো উজ্জীবিত করা যায়, সেই ব্যাপারে তিনি আমার সঙ্গে আলোচনাও করেছিলেন। এই কারনেই চাকরীর স্থায়ীত্বতার ব্যাপারে আমার মধ্যে দৃঢ় বিশ্বাস জন্মে ছিল।

এক দিন আমাকে হিউম্যান রিসোর্সের প্রধানের সঙ্গে দেখা করতে বলা হল। কোন দু:শ্চিন্তা না করেই আত্মবিশ্বাসে বুক ফুলিয়ে জোরে জোরে পা ফেলে তার অফিসে ঢুকে পড়লাম। মিটিংয়ের শুরুতে ইতিবাচক কিছু কথা বলেই তিনি আমাকে জানালেন যে আমাকে কোম্পানীর আর প্রয়োজন নেই। শুনে হতবাক হয়ে ও অবিশ্বাসে আমি এইচআর প্রধানকে বললাম যে, দুই দিন আগেও সিইও আমার সঙ্গে আমার দলকে শক্তিশালী ও উজ্জীবিত করার বিষয়ে আলোচনা করেছিলেন। আর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এমন কী হলো? এই প্রশ্নের কোন ন্যায়সঙ্গত বা যুক্তিসঙ্গত উত্তর আমি তার কাছ থেকে পেলাম না।

আমি ঝড়ের বেগে অফিস থেকে বের হয়ে সরাসরি আমার দলের কাছে গিয়ে খবরটা জানালাম। শুনে তারাও ভীষন অবাক হল। আমি সেখান থেকে বের হয়ে বাড়ি চলে গেলাম। “কী হল এটা?”, “কেন এমন হল?”, “আমার পরিবারকে আমি কী বলব?“ ইত্যাদি বহু চিন্তা মাথায় ঘুরছিল। আমি ঘটনাটি আসলে বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না। খুব অপমানিত বোধ করছিলাম; আমার বিশ্বাসের জায়গাটা কষ্টে দু:খে ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গিয়েছিল।

প্রায় এক বছর হল আমি চাকরি হারিয়েছি। কিন্তু এখনও আমার ভিতরে অনেক রাগ, দুঃখ আর অপমানবোধ কাজ করে। আমি এখনও চাকরির খুঁজছি ঠিকই, কিন্তু এই বিশ্বাসঘাতকতার অভিজ্ঞতা আমার উপর চরমভাবে প্রভাব বিস্তার করেছে। অনেকেই বলে যে, সময় সকল ক্ষতকে সারিয়ে তোলে। আমিও আশা করছি আমারও যেন তাই হয়। বর্তমানে আমার কোন চাকরি নেই, কিন্তু হাল ছেড়ে দেইনি।

আপনিও যদি একই রকম সংগ্রামের মধ্য দিয়ে গিয়ে থাকেন বা এখনও যাচ্ছেন, তাহলে নিজেকে একা মনে করবেন না। অনুগ্রহ করে আমাদের যে কোন একজন পরামর্শদাতার কাছে লিখুন ও এই বিষয় নিয়ে কথা বলুন। এই সহযোগিতা বিনামূল্যেই পাওয়া যাবে এবং আপনার সকল তথ্য সম্পূর্ণ গোপন রাখা হবে। নিচের তথ্যগুলো পূরণ করলে আপনি খুব শীঘ্রই আমাদের পরামর্শদাতাদের কাছ থেকে উত্তর পাবেন। আপনি চাইলে গোপনীয়তার জন্য নকল নামও ব্যবহার করতে পারেন। আবার চাইলে আসল নামও ব্যবহার করতে পারেন।

#####লেখকের নাম গোপনার্থে বদল করা হয়েছে

ছবি স্বত্ব ভেঙ্কাদেশ সুভ্রামানিয়ান

আপনার একা লড়াই করার প্রয়োজন নেই। একজন নির্দেশকের সাথে কথা বলুন, এটি গোপন থাকবে।

এই সংগ্রামের সাথে লড়াই করা কঠিন। আপনি যদি নিজের বা অন্যকে ক্ষতি করার কথা ভেবে থাকেন তাহলে, এটি পড়ুন!

দয়া করে নীচের ফর্মটি পূরণ করুন যাতে আমরা আপনার সাথে যোগাযোগ করতে পারি। উল্লেখিত ফিল্ট ছাড়া বাকি সব ফিল্ডগুলি আবশ্যক।

আপনার লিঙ্গ:
বয়স সীমা:

আপনার জন্য সঠিক মেন্টর নিযুক্ত করার জন্য আপনার লিঙ্গ ও বয়স জানতে চাই। ব্যবহারের শর্তাবলী & গোপনীয়তা নীতি.