এক দশকেরও বেশি সময় ধরে, আমি এমন একজন ব্যক্তির সাথে বিবাহিত সম্পর্কে ছিলাম যে কিনা পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত ছিল। কিন্তু আমি একেবারেই টের পাইনি। এর পেছনে একটা কারণ ছিল তার পেশাগত দক্ষতা। সে একজন কম্পিউটার প্রোগ্রামার ছিল, তাই নিজের কম্পিউটারে থাকা পর্নোগ্রাফির প্রমাণ গোপন করতে সে ছিল অত্যন্ত সক্ষম। তাছাড়া, তার এমন কোনো সমস্যা আছে বলে আমার সন্দেহ করার কোনো কারণ ছিল না।

আমাদের ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের কিছু সমস্যা আমি বুঝতে পারতাম। সে দীর্ঘ সময় ধরে শারীরিক সান্নিধ্য বা যৌনতার প্রতি আগ্রহ দেখাত না। যদি আমি এ বিষয়ে তার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করতাম, সে নিজের অনাগ্রহের জন্য নানা যুক্তি দিত বা কোনোভাবে আমাকেই দোষারোপ করত।

কখনো কখনো সে অদ্ভুত আচরণ করত—কথোপকথনের সময় অন্যমনস্ক হয়ে যেত বা একা সময় না কাটাতে সহজেই বিরক্ত হয়ে যেত। অনেকটা আমার মাদক বা অ্যালকোহলে আসক্ত বন্ধুদের মতো আচরণ। যদিও আমি সন্দেহ করেছিলাম যে সে কোনো কিছুতে আসক্ত, তবে কোনো প্রমাণ পাইনি যে সে কোনো মাদকের উপর নির্ভরশীল। তখন আমি জানতাম না যে কেউ পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত হতে পারে।

দ্বিচারিতা ও প্রতারণা

অবাক ব্যাপার ছিল, আমার প্রাক্তন স্বামী প্রকাশ্যে পর্নোগ্রাফির বিরুদ্ধে সরব ছিলেন। আমার মনে আছে, একবার তার এক বন্ধু তাকে জিজ্ঞেস করেছিল সে পর্ন দেখে কীনা। জবাবে আমার স্বামী ক্ষুব্ধ হয়ে বলেছিল, “আমি কখনো আমার স্ত্রী এবং মেয়েদের অসম্মান করে এসব জিনিস দেখবো না।” এবং আমি তাকে বিশ্বাস করেছিলাম।

তাই যখন সে আমাকে তার পর্ন দেখার অভ‍্যাসের কথা জানায়, তখন আমার নিজেকে প্রতারিত মনে হয়েছিল। শুধু তাই নয়, আমার কাছে মনে হয়েছিল যে সে ভার্চুয়াল ছবির মাধ্যমে আমাকে একপ্রকার “প্রতারণা” করেছে। তাছাড়া, সে এমন একজন ব্যক্তি হিসেবে জীবন যাপন করছিল, যা সে নয়। এটি ভয়ানক ছিল। সে নিজেকে একজন সৎ, যৌনভাবে বিশ্বস্ত স্বামী হিসেবে উপস্থাপন করেছিল। কিন্তু বাস্তবে, এটি ছিল তার সম্পূর্ণ বিপরীত।

তার আচরণের সত্যতা একবারে প্রকাশ পায়নি। এটি ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসে। সে প্রথমে স্বীকার করত যে তার অভ‍্যাস ছোটখাটো বিষয় ঘিরে, যেমন অন্তর্বাসের ক্যাটালগ দেখা। তারপর, যখন মনে হতো আমরা এটি নিয়ে কথা বলে সমাধান করেছি, সে আরও ভয়াবহ কিছু স্বীকার করত। এবং এটি বারবার ঘটেছে।

আত্মবিশ্বাসের ভাঙন

আমি তার অপ্রতিরোধ‍্য আচরণে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম এবং ভয় পেয়েছিলাম, যার অনেক কিছুই আমি বহু বছর ধরে জানতে পারিনি। তাছাড়া, যখন আমি জানতে পারলাম সে পর্নোগ্রাফি দেখছে, তখন ভেবেছিলাম আমার মধ্যেই কোনো ত্রুটি আছে। স্পষ্টতই, আমি ভেবেছিলাম, আমি কোনো না কোনোভাবে অপ্রতুল। আমি তার জন্য যথেষ্ট সুন্দর নই, যথেষ্ট আকর্ষণীয় নই, যথেষ্ট বাধ্য নই, বা আমার নারীত্বে কোন ঘাটতি আছে।

একই সময়ে, আমার মনে হয়েছিল আমার মধ্যে অনেক বাড়াবাড়ি আছে। আমি খুব বাস্তব, খুব মানবিক, আমার আবেগ ও চাহিদা তার চেয়ে আলাদা। আমি খুব বেশি আবেগপ্রবণ, খুব সংবেদনশীল, খুব ত্রুটিপূর্ণ। এর ফলে আমি গভীর লজ্জা, প্রত্যাখ্যান এবং একাকিত্ব অনুভব করতাম।

ব্যক্তিগত মূল্যবোধের ক্ষতি

তারপর, আমি অনুভব করলাম যে আমি পুরোপুরি অবমূল্যায়িত। সেই একমাত্র ব্যক্তি যাঁর আমাকে অনন্য, অপরিবর্তনীয় এবং আকর্ষণীয় মনে করার কথা। অথচ সে তার যৌন শক্তিটা আমার বদলে একটি স্ক্রিনের দিকে কেন্দ্রীভূত করেছিল। আমার নিজেকে মনে হত অব্যক্ত, অমানবিক, এবং আমার জায়গাটা অন‍্য কেউ দখল করে ফেলেছে।।

সত্যি বলতে, আমি নিজেকে কুৎসিত মনে করতাম—গভীরভাবে, ভীষণভাবে কুৎসিত। মনে হতো যেন আমাকে এমন এক সৌন্দর্যের মানদণ্ড পূরণ করতে বলা হচ্ছে যা একেবারেই অসম্ভব। ফলে, আমি নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলাম। লজ্জায় আমি নিজেকে আড়াল করতাম।

পুনরুদ্ধারের পথে

আমি এখন বুঝতে পেরেছি, আমার প্রাক্তন স্বামী আমাকে “খুব বেশি কাঙাল” মনে করতেন। তবে সেটা আমার কারণে নয়, বরং তিনি আমার স্বাভাবিক চাহিদাগুলি পূরণ করতে অক্ষম ছিলেন। আমি আকর্ষণীয় ছিলাম না, এমন নয়। তিনি নিজেকে কল্পনার জগতে আটকে ফেলেছিলেন। বাস্তব কোনো মানুষই তার সেই কল্পনার সঙ্গে তুলনীয় হতে পারে না।

দুর্ভাগ্যবশত, আমার স্বামী একমাত্র ব্যক্তি ছিলেন না যিনি আমাকে লজ্জায় ফেলেছিলেন। অনেকেই মনে করেছিলেন আমি তার আসক্তির জন্য দায়ী, কারণ তারা ধরেছিল আমি হয়তো যৌনতার ক্ষেত্রে কিছু আটকিয়ে রেখেছিলাম। তারা বুঝতে পারেনি যে আমার স্বামীই আমার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করতে চাইতেন না।

নিজেকে পুনর্নির্মাণ

তবে বাস্তবতা হলো, আমি ঠিক আছি। আমি কোনো সমস্যা নিয়ে জন্মাইনি। তার পছন্দগুলোর দায় আমার নয়। আমার মধ‍্যে কোন অতিরিক্ততা নেই, কোন কমতিও নেই। আমি যেমন আছি, তেমনটাই সঠিক। আল্লাহ্ আমাকে যেমন সৃষ্টি করেছেন, আমার মানবিক চাহিদা ও ইচ্ছাসহ, ঠিক তেমনটাই।

যদি আপনার সঙ্গী পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত থাকেন, জানবেন আপনি একা নন। আমরা আপনার পাশে আছি। নিচে আপনার তথ্য দিয়ে আমাদের জানান, আমাদের দলের কেউ আপনার সাথে খুব শিগগিরই যোগাযোগ করবে। আমাদের পরামর্শ সেবা গোপনীয় এবং সবসময় বিনামূল্যে।