অনেক আঘাত সহ্য করে বেঁচে আছি
আমার বয়স যখন আট বছর তখন থেকেই আমি মারিজুয়ানা সেবন করতে শুরু করি। আমার দাদু ঔষুধ হিসাবে এই মারিজুয়ানা ব্যবহার করতেন, তাই আমি তাকে সবসময়ই সেবন করতে দেখতাম। কখনও যদি তিনি একটুখানি ফেলে রেখে যেতেন, আমি সেটুকু ছিনিয়ে নিয়ে বাইরে গিয়ে নিজেও সেবন করতাম।
আমার বয়স যখন বারো তখন আমরা ঘর পাল্টে অন্য জায়গায় যাই, আর ওই বয়সে জায়গা পরিবর্তন মেনে নেওয়া বেশ কঠিন ছিল। এমনকি এক বছর পরেও আমার বন্ধু ছিল মাত্র দু‘জন । তাই মনের কষ্টে আমি প্রায়ই মারিজুয়ানা সেবন করতাম। এভাবেই আমি নিজেকে মানিয়ে নিয়েছিলাম। একদিন, আমার বন্ধুরা আমার পিছু পিছু জঙ্গলে এসে আমাকে সেবন অবস্থায় হাতেনাতে ধরে ফেলে। এই কারণে তারা আমার সাথে প্রায় দেড় বছর যাবত কথা বলেনি। আগে দু‘জন বন্ধু ছিল, আর এখন ওরাও ছেড়ে চলে গেলো।
তাই আমি ভীষণভাবে বিষন্ন হয়ে পড়লাম। আপনার সংগে কথা বলার কেউ না থাকলে তো এমনটাই হবার কথা। আর এই কারণে আমি আরও বেশি মারিজুয়ানায় আসক্ত হয়ে পরি। আমি যখন বুঝলাম যে আসক্তির বাঁধ ভেঙ্গে গিয়ে নেশার মাত্রা আরো বেড়ে গেছে, আমি আরও বেশি করে এগুলো পাওয়ার রাস্তা খুঁজতে থাকি, আর খুঁজতে গিয়ে আমি মারিজুয়ানা বেচা-কেনা শুরু করে দেই। সবকিছু বেশ ভালই চলছিল, অনেক টাকাও আসছিল। এই ব্যবসা করতে গিয়ে, আমার জীবনে অনেকবার প্রান নাশের হুমকিও আসে। আমার বাবা-মা এর কিছুই জানতেন না।
এই পুরোটা সময় আমার মন ভীষন বিষন্ন থাকত। আমার মনে হত আমাকে আসলেই কেউ বোঝে না। এই মারিজুয়ানাই একমাত্র মাধ্যম ছিল যা আমার মাথাকে কিছুক্ষণের জন্য হলেও সেই বিষন্নতাবোধ থেকে মুক্ত করত এবং আমাকে খুশি রাখত। কোন কোন সময় যখন সেই বিষন্নতাবোধ সহ্যের সীমার বাইরে চলে যেত, আমি আমার পিস্তলে গুলি ভরতাম, এবং আমার মাথার দিকে তাক করে ট্রিগারে আঙ্গুল দিয়ে বসে বসে ভাবতাম।
২০১৫ সালের জানুয়ারির ৩ তারিখের এক রাতে, আমি অনেকগুলো মারিজুয়ানা ঘরে নিয়ে আসি। যেগুলো আমার শোবার ঘরের টেবিলে এলোমেলো করে রাখা ছিল। আমি ওই রাতে সিদ্ধান্ত নিলাম নিজেকে হত্যা করব, নতুবা যত মাদক আছে একসঙ্গে সেবন করব। আমি ছুরি হাতে নেই, ভাবছিলাম হাত কাটব। কিন্তু আমি এত জোরে গান শুনছিলাম যে আমার মা শুনে রুমে চলে আসেন। আর আমার অবস্থা দেখে তিনি আঁতকে উঠেন, তিনি ভাবলেন মারিজুয়ানাগুলো আমার দাদুর। আমার মা বাবাকে ডেকে আনলেন, বাবাও দেখে আঁতকে উঠলেন।
আমি ওই রাতে সিদ্ধান্ত নিলাম নিজেকে হত্যা করব, নতুবা যত মাদক আছে সেবন করব।
সেই সময়ে বাবার সংগে আমার সম্পর্ক ভাল যাচ্ছিল না, তাই এই অবস্থা দেখে তিনি পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে করে ফেললেন। তিনি আমার দাদুকে ফোন করবেন বলে হুমকি দিলেন। আমি জানি বাবা ফোন করলে দাদু বিপদে পরবেন। আমি তখনও হাতে ছুরি ধরে ছিলাম, আর ওটা বাবার দিকে তাক করলাম। আমার ঠিক মনে নেই মা কিভাবে আমার হাত থেকে যবরদস্তি ছুরি কেড়ে নিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি নিয়েছিলেন।
সেই রাতই ছিল আমার জীবনের দিক পাল্টে যাবার রাত। আমি ভীষন ভয় পেয়েছিলাম।
ঐ ঘটনার পরে আমি আমার বিষন্নতাবোধ থেকে বের হয়ে আসার জন্য ওষুধ খেতে থাকি এবং একজন পরামর্শকের কাছে যেতে শুরু করি। আর জানুয়ারির সেই রাত থেকেই আমি আর মারিজুয়ানা সেবন করিনি, ঐ পরিস্থিতি আমাকে আসলেই সাহায্য করেছিল। যদিও আমার ভিতরে তখনও রাগের সমস্যা ছিল, কিন্তু আমি বিভিন্ন শারীরিক কাজ কর্মের মধ্যে নিজেকে জড়িত রেখে সেই রাগজনিত আবেগ থেকে বের হয়ে আসতে সমর্থ হই। এখন আমার অনেক বন্ধু হয়েছে।
আপনাকে কেউ বোঝে না বলে আপনি যদি আমার মতই চরম নিঃসঙ্গতা বোধ করেন, আপনি যদি নিজের জীবন নেবারও কথা ভাবেন। তবে আপনার এই পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসবার জন্য সবচেয়ে ভাল হয় যদি কারো কাছে তা খুলে বলতে পারেন। আপনি যদি আপনার সংগে যোগাযোগের মাধ্যম নীচে লিখে পাঠান, তবে কেউ একজন আপনার সংগে যোগাযোগ করবে এবং আপনার কথা শুনবে এবং আপনাকে সাহায্য করবে। কারণ, আপনি একা নন। আমরা আপনার পাশে আছি।
আপনার একা লড়াই করার প্রয়োজন নেই। একজন নির্দেশকের সাথে কথা বলুন, এটি গোপন থাকবে।
এই সংগ্রামের সাথে লড়াই করা কঠিন। আপনি যদি নিজের বা অন্যকে ক্ষতি করার কথা ভেবে থাকেন তাহলে, এটি পড়ুন!
দয়া করে নীচের ফর্মটি পূরণ করুন যাতে আমরা আপনার সাথে যোগাযোগ করতে পারি। উল্লেখিত ফিল্ট ছাড়া বাকি সব ফিল্ডগুলি আবশ্যক।